আপনি জানেন কি, প্রতিদিন হার্ট অ্যাটাকের কারণে পৃথিবীতে ১৮ মিলিয়নের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এককভাবে হার্ট অ্যাটাক পৃথিবীর মোট মৃত্যুর ৩২% ঘটিয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক মৃত্যু শুধুমাত্র আধুনিক জীবনযাপনের ফল নয়, বরং আমাদের খাদ্যাভ্যাসের ওপরও তা নির্ভর করে। আর এই খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে একটি বিশেষ উপাদান নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বিতর্ক চলছে – ডিম।
একদিকে, ডিমকে বলা হয় “Complete Food” কারণ এতে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। অন্যদিকে, অনেকেই বিশ্বাস করেন যে ডিম খাওয়া হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষ করে এর কোলেস্টেরলের কারণে। তাহলে কি হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের ডিম খাওয়া একেবারেই নিষিদ্ধ? নাকি ডিম সত্যিই হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর নয়? আসুন, আজকের এই লেখায় আমরা এই কঠিন প্রশ্নের জট খুলে দেখি এবং বুঝে নিই যে হার্ট অ্যাটাকের রোগীরা আদৌ ডিম খেতে পারবেন কি না।
হার্ট অ্যাটাকের রোগীরা কি ডিম খেতে পারবে?
‘American Journal of Clinical Nutrition’ এর সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে যারা নিয়মিত ডিম খায় তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ১৮% পর্যন্ত কম হতে পারে? শুনে কি চমকে গেলেন? তবে আসল সত্যটা কী? আসুন, হার্ট অ্যাটাক ও ডিমের সম্পর্কের আরেকটু গভীরে প্রবেশ করি এবং দেখুন, আপনার ডাইনিং টেবিলে থাকা সেই প্রিয় সেদ্ধ ডিমটি কি সত্যিই আপনার হৃদয়ের শত্রু, নাকি বন্ধু?
হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের ডিম খাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করা জরুরি, বিশেষত তাদের জন্য যাদের হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে। ডিমের খাদ্যগুণ এবং এর মধ্যে থাকা উপাদানগুলোর প্রভাব হৃদপিণ্ডের ওপর কেমন পড়তে পারে, তা বিশ্লেষণ করাই এই প্রসঙ্গে সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ডিমের পুষ্টিগুণ এবং হৃদরোগে উপকারিতা
ডিম উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন ডি, বি১২, রাইবোফ্লাভিন, সেলেনিয়াম এবং খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ, যা শরীরের পুষ্টি বজায় রাখতে সহায়ক।
প্রোটিন: ডিমে যে উচ্চমানের প্রোটিন থাকে, তা মাংসপেশি, টিস্যু এবং হাড় শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন ডি এবং বি১২: ভিটামিন ডি হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে সহায়তা করে। বি১২ নার্ভ এবং ব্লাড সেলগুলোর স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং মস্তিষ্কের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। হৃদরোগীদের জন্য এগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এগুলো রক্ত সঞ্চালন ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক।
সেলেনিয়াম: একটি ডিমে প্রায় ২২% সেলেনিয়ামের দৈনিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং শরীরকে মুক্তমূলকণার ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যক্ষমতা হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করতে পারে।
ডিমের কোলেস্টেরল ও হৃদযন্ত্রের উপর প্রভাব
ডিমের কোলেস্টেরল নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, কারণ ডিমের কুসুমে উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে।
রক্তের কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ: একটি ডিমে গড়ে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যা মূলত কুসুমে কেন্দ্রীভূত। যদিও সাধারণত শরীর নিজেই কোলেস্টেরল তৈরি করে, তবে ডায়েটারি কোলেস্টেরল অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে হৃদযন্ত্রে ব্লকেজের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কোলেস্টেরল সহনশীলতা: বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ডায়েটারি কোলেস্টেরল রক্তের কোলেস্টেরল তেমন বাড়ায় না। তবে হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জন্য সাধারণত কম কোলেস্টেরলযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে বলা হয়, যাতে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং ব্লকেজের ঝুঁকি কম থাকে।
ডিমের সাদা অংশের উপকারিতা এবং কুসুমের সীমাবদ্ধতা
ডিমের সাদা অংশে কোনো কোলেস্টেরল থাকে না এবং এটি প্রোটিনে ভরপুর। তাই এটি কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ঝুঁকি ছাড়াই পুষ্টি সরবরাহ করে।
সাদা অংশ: সাদা অংশে প্রোটিন এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। হার্ট অ্যাটাকের রোগীরা সাদা অংশ গ্রহণ করলে হৃদযন্ত্রের ওপর তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না।
কুসুমের সীমাবদ্ধতা: যদিও কুসুমে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে, তবে এর কোলেস্টেরল উচ্চমাত্রায় থাকে, যা হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জন্য নিরাপদ নয়। কিছু চিকিৎসক হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের কুসুম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সাদা অংশ খাওয়ার পরামর্শ দেন।
হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জন্য ডিমের সীমিত গ্রহণের নিয়ম
হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জন্য সপ্তাহে ডিমের সংখ্যা সীমিত রাখা উচিত। গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ৩-৪টি ডিম খাওয়া সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় না, তবে এটি অন্যান্য খাদ্য গ্রহণের উপরেও নির্ভর করে।
সুষম ডায়েটের সাথে সংযুক্তি: উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত অন্যান্য খাবার যেমন লাল মাংস, ফাস্ট ফুড ইত্যাদির সঙ্গে ডিম খাওয়া হলে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই ডিম খাওয়ার সময় পুরো খাদ্যাভ্যাসে কোলেস্টেরল এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
গবেষণার ভিত্তিতে হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের ডিম গ্রহণের পরামর্শ
বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, সীমিত পরিমাণে ডিম খাওয়া হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে, যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা খুবই সংবেদনশীল, তাদের জন্য কোলেস্টেরলমুক্ত বা কম কোলেস্টেরলযুক্ত খাদ্য সবচেয়ে নিরাপদ।
বিশেষজ্ঞদের মতামত: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জন্য প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রামের বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ না করার পরামর্শ দেয়। তাদের মতে, সপ্তাহে ৩-৪টি ডিম খাওয়া নিরাপদ হতে পারে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।
জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাসের সঠিক সামঞ্জস্য
ডিম খাওয়ার পাশাপাশি জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
- শরীরচর্চা ও পরিমিত খাদ্য: নিয়মিত শরীরচর্চা, নিয়ন্ত্রিত ডায়েট এবং কম স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। ডিম খাওয়ার সময় কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা উচিত।
- অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাদ্য পরিহার: যদি ডিম গ্রহণ করতে চান, তবে অতিরিক্ত চর্বি, প্রসেসড খাবার এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
হার্ট অ্যাটাকের পাশাপাশি আর কি হলে ডিম খাওয়া যাবে না?
হার্ট অ্যাটাক ছাড়াও যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে, তাদের ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলা ভালো। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল এবং ফ্যাট রক্তচাপের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার রক্তনালীর গঠনে সমস্যা সৃষ্টি করে, যার ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডিমের কুসুম ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং এটি ধমনীতে জমে হার্ট ব্লকেজ বা কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার খেলে রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, যা ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়- এক নজরে হার্ট অ্যাটাকের প্রকৃত কারণ!
যাদের লিভারের সমস্যা, কিডনির রোগ বা পিত্তথলিতে পাথর রয়েছে তাদেরও ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলা উচিত। লিভার ফাংশন দুর্বল হলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, কারণ লিভার কোলেস্টেরল প্রক্রিয়াকরণে মূল ভূমিকা পালন করে। কিডনির রোগীদের জন্য উচ্চ প্রোটিন এবং কোলেস্টেরল খাবার বিপাক প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা কিডনির কার্যক্ষমতা আরও হ্রাস করতে পারে। পিত্তথলিতে পাথর থাকলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল পিত্তথলিতে জমা হতে পারে এবং পিত্তের সমস্যা বাড়াতে পারে। এইসব রোগে ডিমের কুসুম খাওয়া উপকারী নয় বরং ক্ষতির কারণ হতে পারে, তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন, তবে কুসুম এড়িয়ে চলাই ভালো।
হার্ট অ্যাটাক রোগীদের জন্য কিছু সাধারণ পরামর্শ
- সুষম ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা: প্রতিদিনের খাবারে কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কম চিনি এবং কম লবণযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। ফলমূল, সবজি, সম্পূর্ণ শস্য এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। অতিরিক্ত কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সুষম খাদ্য হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য।
- নিয়মিত শরীরচর্চা করা: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাইক্লিং বা সাঁতার কাটুন। ব্যায়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং কোলেস্টেরল স্তর কমায়। শরীরচর্চা হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং স্ট্রেস হ্রাস করে। তবে কোনও কঠিন ব্যায়াম শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
- পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা: প্রতিরাতে ৭-৮ ঘণ্টা পরিপূর্ণ ঘুম হৃদযন্ত্রের সুস্থতায় সহায়ক। ঘুমের অভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, কারণ এটি রক্তচাপ এবং মানসিক চাপকে প্রভাবিত করতে পারে। নিয়মিত ঘুম হৃদযন্ত্রকে বিশ্রাম দেয় এবং পুনর্জীবিত রাখে। রাতের ঘুমের সময় নির্দিষ্ট রাখার চেষ্টা করুন।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ করা: ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়ায়। ধূমপান রক্তনালী সংকুচিত করে এবং কোলেস্টেরল জমা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। অ্যালকোহল রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল স্তর বৃদ্ধি করতে পারে, যা হার্টের ক্ষতি করে। এই অভ্যাস ত্যাগ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: অতিরিক্ত ওজন হৃদযন্ত্রের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে এবং উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। সুষম খাদ্য ও শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। সঠিক ওজন রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার স্তর স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য।
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকর, কারণ এটি রক্তচাপ বাড়ায় এবং হৃদস্পন্দন দ্রুত করে। মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ও আরামদায়ক কাজের মাধ্যমে মানসিক চাপ হ্রাস করতে পারেন। প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো বা শখের কাজ করা মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। ইতিবাচক মানসিকতা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো: নিয়মিত রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং রক্তের শর্করা পরীক্ষা করুন। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যেকোনো সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ জানা সম্ভব হয়, যা দ্রুত প্রতিরোধের জন্য সহায়ক। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন এবং প্রয়োজন হলে নিয়মিত চেকআপ করান। সময়মতো পরীক্ষার মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা: হার্ট অ্যাটাকের পর সঠিক ওষুধ গ্রহণ হৃদরোগ পুনরায় প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওষুধ গ্রহণের সময় এবং মাত্রা নির্ধারিতভাবে অনুসরণ করুন। চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়া কোনও ওষুধ পরিবর্তন বা বন্ধ করবেন না। নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
শেষ কথা,
ডিম খাওয়া নিয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণাগুলি এখনো আমাদের মাঝে ঝেঁকে বসে আছে। কিন্তু এই আর্টিকেল থেকে আলোচনার পর, আশা করি, আপনার মনের সব ধোঁয়াশা কেটে গেছে। ডিমে বিদ্যমান প্রোটিন, ভিটামিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে যদি এটি সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক উপায়ে খাওয়া হয়। ‘Journal of the American College of Nutrition’ এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ৩-৪টি ডিম খাওয়া হার্টের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং তা সুস্থ হৃদযন্ত্র বজায় রাখতে সহায়ক।
তবে, এটাও মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি মানুষের শারীরিক অবস্থা ভিন্ন। তাই হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জন্য সেরা সিদ্ধান্ত হল ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডিম খাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা। কারণ, এক রোগীর জন্য যা উপকারী, তা অন্যজনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সুতরাং, ডিমের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন, তবে তা হোক বুঝেশুনে। মনে রাখবেন, ‘Balanced Diet’ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই হতে পারে আপনার হৃদপিণ্ডের প্রকৃত বন্ধু। এখন আপনার পালা, আগামী সকালের নাস্তায় কি আপনি একটি সেদ্ধ ডিম খেতে চাইবেন? সিদ্ধান্ত আপনার!