প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন, কিন্তু অনেকেই সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পান না। অবাক করার বিষয় হলো, হার্ট অ্যাটাক এমন এক নীরব ঘাতক, যার লক্ষণ অনেক সময় শুরুতেই বোঝা যায় না। এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র উপসর্গ বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আপনি কি জানেন, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলো কি কি? এছাড়াও হার্ট অ্যাটাক হলে অনেক সময় বুকের ব্যথা ছাড়াও শরীরের অন্যান্য জায়গায় অস্বাভাবিক অনুভূতি হতে পারে? যেমন, হাত, ঘাড়, এমনকি পিঠেও ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তাই এই মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এই লেখায় আমরা হার্ট অ্যাটাক হলে কীভাবে তা চিনবেন, প্রাথমিক লক্ষণগুলো কী এবং সময়মতো চিকিৎসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
হার্ট অ্যাটাক কি?
হার্ট অ্যাটাক, যা চিকিৎসা পরিভাষায় মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন নামে পরিচিত, একটি মারাত্মক অবস্থা যেখানে হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণত এটি তখন ঘটে যখন করোনারি ধমনীতে চর্বি, কোলেস্টেরল বা অন্যান্য পদার্থ জমা হয়ে প্ল্যাক তৈরি করে। এই প্ল্যাক ফেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে এবং ধমনী সম্পূর্ণভাবে ব্লক হয়ে যায়। এর ফলে হৃদপিণ্ডের একটি অংশ পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না এবং কোষগুলো ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হিসেবে সাধারণত বুকের মাঝখানে চাপ বা অস্বস্তি অনুভূত হয়। এই ব্যথা কাঁধ, ঘাড়, পিঠ বা বাহু পর্যন্ত ছড়াতে পারে। শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, ক্লান্তি এবং হঠাৎ ঠান্ডা ঘামও হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণ। এটি চিকিৎসার জন্য একটি জরুরি অবস্থা, কারণ দ্রুত চিকিৎসা না করলে এটি মারাত্মক হতে পারে এবং হৃদপিণ্ডের স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে।
হৃদপিণ্ডের কাজ কী?
হৃদপিণ্ড মানব দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি, যা রক্ত পাম্প করার মাধ্যমে দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেয়। এটি একটি শক্তিশালী পেশী, যা প্রতিদিন গড়ে এক লক্ষ বারের বেশি সংকুচিত হয় এবং প্রায় ৭,০০০ লিটার রক্ত সারা শরীরে পাম্প করে। এই নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঠিক কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করে।
হৃদপিণ্ডের প্রধান কাজ হলো অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত ফুসফুস থেকে গ্রহণ করা এবং তা দেহের প্রতিটি কোষে পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি এটি দেহের কোষ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ গ্রহণ করে তা ফুসফুসের মাধ্যমে বের করে দেয়। হার্ট অ্যাটাক হলে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যা দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতাকে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের কারণ
হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম প্রধান কারণ হলো করোনারি ধমনীর ব্লকেজ। এটি সাধারণত অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের কারণে হয়, যেখানে ধমনীতে চর্বি, কোলেস্টেরল ও অন্যান্য পদার্থ জমে প্ল্যাক তৈরি করে। এই প্ল্যাক ফেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধে এবং রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, স্থূলতা এবং পারিবারিক ইতিহাসও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন যেমন অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এবং মানসিক চাপও ঝুঁকি বাড়ায়। হার্ট অ্যাটাক হলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া এবং জীবনধারায় পরিবর্তন আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হার্ট অ্যাটাকের ধরন
হার্ট অ্যাটাক সাধারণত দুই ধরনের হয়—এসটেমি (STEMI) এবং নন-এসটেমি (NSTEMI)। এসটেমি হার্ট অ্যাটাক সবচেয়ে বিপজ্জনক কারণ এতে ধমনী সম্পূর্ণ ব্লক হয়ে যায়। এটি দ্রুত চিকিৎসা না পেলে হৃদপেশীর স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
নন-এসটেমি হার্ট অ্যাটাক হলে ধমনীর আংশিক ব্লকেজ হয়। এটি অপেক্ষাকৃত কম মারাত্মক হলেও অবহেলা করা উচিত নয়। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে প্রিন্জমেটাল অ্যাঙ্গিনা বা করোনারি স্পাজমের কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, যেখানে ধমনী সাময়িক সংকুচিত হয়ে রক্ত প্রবাহ ব্যাহত হয়। হার্ট অ্যাটাক হলে এর ধরন সঠিকভাবে নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।
হার্ট অ্যাটাক হলে বুঝবো কিভাবে?
এবার চলুন এমন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে আসি, যেগুলো প্রকাশ পেলে বুঝবেন হয়তো হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই দেরী না করে চলুন জেনে আসা যাক এমন কিছু হার্ট অ্যাটাকের সিমটম সম্পর্কে।

বুকের মাঝখানে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো বুকের মাঝখানে ব্যথা বা চাপ অনুভূত হওয়া। এটি অনেক সময় ভারী কিছু বুকের ওপর চেপে বসার মতো অনুভূত হয়। এই ব্যথা সাধারণত কয়েক মিনিট স্থায়ী হয় এবং সময়ে সময়ে আসা-যাওয়া করতে পারে। ব্যথাটি খুব তীব্র হতে পারে, যা অনেক ক্ষেত্রে রোগীর নড়াচড়ার ক্ষমতাও সীমিত করে দেয়।
এই ব্যথা প্রায়ই শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে, যেমন—কাঁধ, ঘাড়, পিঠ বা চোয়ালে। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে বাঁ হাত বা উভয় হাতে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এটি শরীরের স্নায়ুব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া, যা হৃদপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হলে দেখা দেয়। তাই, যদি এমন ব্যথা বা চাপ অনুভব করেন এবং এটি কিছুক্ষণের মধ্যে স্বাভাবিক না হয়, তবে তা হার্ট অ্যাটাকের একটি প্রধান লক্ষণ হতে পারে।
শ্বাসকষ্ট বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
হার্ট অ্যাটাক হলে অনেক সময় রোগী শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। এটি সাধারণত হৃদপিণ্ড ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে না পারার কারণে ঘটে। হৃদপিণ্ড যখন সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন ফুসফুসে তরল জমতে শুরু করে, যা শ্বাস নেওয়াকে কঠিন করে তোলে। এটি রোগীর জন্য অস্বস্তিকর এবং কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট এত তীব্র হয় যে এটি অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে দ্রুত খারাপ অবস্থার দিকে নিয়ে যায়।
শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি বুকে চাপ, ঘাম এবং দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে। এটি অনেক সময় রোগীর একমাত্র উপসর্গ হিসেবে উপস্থিত হয়, বিশেষত বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। তাই, হার্ট অ্যাটাক হলে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
হঠাৎ ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব করা
হার্ট অ্যাটাকের একটি সাধারণ কিন্তু প্রায়ই অবহেলিত লক্ষণ হলো হঠাৎ ক্লান্তি বা দুর্বলতা। রোগী কোনো শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। এই ক্লান্তি অনেক সময় শরীরের ভারসাম্যহীনতার কারণে ঘটে, যেখানে হৃদপিণ্ড দেহের বিভিন্ন অঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়।
বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গটি বেশি দেখা যায় এবং অনেক সময় তা দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত থাকতে পারে। যদি স্বাভাবিক কার্যকলাপের সময় বা বিশ্রামের সময়ও এমন ক্লান্তি অনুভূত হয় এবং এটি অন্যান্য লক্ষণের সঙ্গে মিলে যায়, তবে এটি হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত দিতে পারে।
ঠান্ডা ঘাম হওয়া
হার্ট অ্যাটাক হলে রোগীর শরীরে ঘাম হতে পারে, যা সাধারণত ঠান্ডা ঘাম হিসেবে অনুভূত হয়। এটি শরীরের স্ট্রেস বা ধমনীতে রক্ত চলাচলের বাধার প্রতিক্রিয়া। ঠান্ডা ঘামের সঙ্গে প্রায়ই মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এবং বুকের ব্যথা দেখা যায়।
এ ধরনের ঘাম সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই হয় এবং তা হার্ট অ্যাটাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে। ঠান্ডা ঘামের সঙ্গে যদি অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায়, তবে তা অবিলম্বে চিকিৎসকের নজরে আনা উচিত। কারণ, সময়মতো চিকিৎসা না করলে এটি জীবননাশের কারণ হতে পারে।
মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়া
হার্ট অ্যাটাকের সময় অনেক রোগী মাথা ঘোরা অনুভব করেন বা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এটি সাধারণত রক্তচাপ হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণে ঘটে। হৃদপিণ্ড যদি সঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে না পারে, তবে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত রক্ত পায় না, যার ফলে মাথা ঘোরা বা বমি ভাব দেখা দেয়।
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এটি এত তীব্র হয় যে তারা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান। যদি মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়ার পাশাপাশি বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডা ঘাম দেখা যায়, তবে তা হার্ট অ্যাটাকের স্পষ্ট লক্ষণ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
হার্ট অ্যাটাক হলে অনেক সময় রোগী বমি বমি ভাব অনুভব করেন বা প্রকৃতপক্ষে বমি করেন। এটি বিশেষত মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ উপসর্গ। হৃদপিণ্ডের রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে পাকস্থলীতে রক্ত সরবরাহ কমে যায়, যার ফলে এই অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
বমি বা বমি বমি ভাবের সঙ্গে যদি বুক ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট উপস্থিত থাকে, তবে এটি অবিলম্বে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা শুরু করার জন্য সতর্ক সংকেত। চিকিৎসার অভাবে এটি মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান
বয়স
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। সাধারণত ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে পুরুষ এবং ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে নারীদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি থাকে। এর কারণ হলো, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধমনীতে চর্বি জমতে শুরু করে, যা রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এছাড়াও, বয়স বাড়ার কারণে হার্টের পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এর কার্যক্ষমতা কমে যায়। ফলে, হার্ট অ্যাটাক হলে বয়স্কদের ঝুঁকি অনেক বেশি।
বয়স্কদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ অনেক সময় অস্পষ্ট হতে পারে, যেমন—শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি বা হালকা বুক ব্যথা। তাই, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা জরুরি। হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত চিকিৎসা না নিলে এটি মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস
যাদের পরিবারের কারও হৃদরোগ রয়েছে, তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেশি। এটি জিনগত কারণেই ঘটে। যদি বাবা-মা বা কাছের আত্মীয়ের কম বয়সে হৃদরোগ হয়ে থাকে, তবে এটি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বড় একটি ঝুঁকির কারণ হতে পারে। পরিবারের ইতিহাস থাকলে হৃদপিণ্ডের রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
হার্ট অ্যাটাক হলে পরিবারের ইতিহাসকে বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। এটি ঝুঁকি নির্ণয়ে সাহায্য করে এবং আগাম সতর্কতার ব্যবস্থা নিতে অনুপ্রাণিত করে। এ ধরনের ঝুঁকি থাকলে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।
ধূমপান
ধূমপান হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম বড় ঝুঁকির কারণ। ধূমপানের ফলে শরীরে নিকোটিন ও কার্বন মনোক্সাইড প্রবেশ করে, যা রক্তনালীর ক্ষতি করে এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এটি ধমনীর প্রাচীরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যা রক্তপ্রবাহের বাধা তৈরি করে। ফলস্বরূপ, হার্ট অ্যাটাক হলে এর প্রভাব আরও জটিল হতে পারে।
ধূমপান শুধু সরাসরি ধূমপায়ীদের নয়, পরোক্ষ ধূমপানের শিকারদের ক্ষেত্রেও ক্ষতিকর। যারা ধূমপান করেন বা ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকেন, তাদের জন্য হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। ধূমপান ত্যাগ করলে এই ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।
উচ্চ রক্তচাপ
উচ্চ রক্তচাপ, যা হাইপারটেনশন নামেও পরিচিত, হার্ট অ্যাটাকের একটি প্রধান কারণ। রক্তচাপ বেশি থাকলে ধমনীগুলোতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং প্ল্যাক তৈরি করে। এই অবস্থায় রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে এটি হার্টের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং হৃদপিণ্ডে স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। তাই, হার্ট অ্যাটাক হলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
উচ্চ কোলেস্টেরল
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে ধমনীগুলোতে চর্বি জমে প্ল্যাক তৈরি হয়। এই প্ল্যাক ধমনীর রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে এবং হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়। বিশেষত, খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বেশি থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
হার্ট অ্যাটাক হলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব। তাই, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করা উচিত।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়। ডায়াবেটিস হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, যা ধমনীগুলোর প্রাচীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি ধমনীগুলোতে চর্বি জমার ঝুঁকি বাড়ায়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
ডায়াবেটিস থাকলে হার্ট অ্যাটাক হলে জটিলতা বেশি হয়। তাই, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ডায়াবেটিসের সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
মোটা শরীর
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় কারণ। মোটা শরীরের ফলে রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, যা হার্টের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়াও, মোটা ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বেশি থাকে, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
হার্ট অ্যাটাক হলে ওজন নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে স্থূলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটি শুধু হার্টের জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্যও প্রয়োজনীয়।
অতিরিক্ত মদ্যপান
অতিরিক্ত মদ্যপান হৃদপিণ্ডের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি রক্তচাপ বাড়ায় এবং ধমনীগুলোর প্রাচীর দুর্বল করে। মদ্যপান থেকে লিভার, কিডনি এবং হৃদপিণ্ডে সরাসরি ক্ষতি হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
হার্ট অ্যাটাক হলে অতিরিক্ত মদ্যপান একটি বড় ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় মদ্যপান বা পুরোপুরি ত্যাগ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস পায়।
স্ট্রেস
মানসিক চাপ বা স্ট্রেস হার্ট অ্যাটাকের আরেকটি বড় কারণ। স্ট্রেসের সময় শরীর অ্যাড্রেনালিন উৎপন্ন করে, যা হৃদপিণ্ডের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এটি ধমনীগুলো সংকুচিত করে এবং রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে।
হার্ট অ্যাটাক হলে স্ট্রেস মোকাবিলা করা অত্যন্ত জরুরি। ধ্যান, ব্যায়াম এবং মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখার মাধ্যমে স্ট্রেস কমানো সম্ভব। এটি হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সহায়ক।
হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসা
অ্যাম্বুল্যান্সে কল করুন
হার্ট অ্যাটাক হলে, প্রথম এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হলো দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্সে কল করা। জরুরি পরিষেবা যত দ্রুত সম্ভব ডাকতে পারলে রোগীর চিকিৎসা প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। এটি নিশ্চিত করে যে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা যায়। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাক হলে প্রথম এক ঘণ্টা রোগীর জীবন রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে সময় নষ্ট না করে দ্রুত পেশাদার সাহায্য চাওয়া জরুরি।
এছাড়াও, হার্ট অ্যাটাক হলে অনেকেই ঘাবড়ে যান এবং কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারেন না। এই অবস্থায় আত্মীয়স্বজন বা আশেপাশের কেউ যদি অ্যাম্বুল্যান্সে কল করেন, তবে চিকিৎসা পেতে সময় নষ্ট হয় না। জরুরি নম্বর মনে রাখুন এবং রোগীর অবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ অ্যাম্বুল্যান্স কর্তৃপক্ষকে জানান। দ্রুত প্রতিক্রিয়া দিতে এই ব্যবস্থা সবচেয়ে কার্যকর।
রোগীকে শুইয়ে রাখুন
হার্ট অ্যাটাক হলে রোগীকে শুইয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি। রোগীর শরীরকে স্বস্তি দিতে এটি সাহায্য করে এবং রক্তপ্রবাহ কিছুটা স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক হয়। সোজা শোয়ার সময় মাথা সামান্য উঁচু অবস্থায় রাখা উচিত যাতে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়। এই অবস্থানে থাকলে রোগীর শরীরে অতিরিক্ত চাপ কমে এবং বুকের ব্যথাও কিছুটা লাঘব হতে পারে।
যদি রোগী বসে থাকার জন্য জোর দেন, তবে তাকে একটি সাপোর্ট দিয়ে রাখুন। তবে হার্ট অ্যাটাক হলে হঠাৎ মুভমেন্ট বা দৌড়ঝাঁপ একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত। এটি রোগীর অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। শুইয়ে রাখার সময় রোগীর পাশে কেউ থাকুন এবং তাকে মানসিকভাবে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।
অক্সিজেন সরবরাহ করুন (যদি উপলব্ধ থাকে)
হার্ট অ্যাটাক হলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পেতে শুরু করে। এই অবস্থায় রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহ করা জরুরি। অক্সিজেনের পর্যাপ্ত পরিমাণ শরীরে সরবরাহ করলে হৃদযন্ত্রে চাপ কমে এবং আক্রান্ত টিস্যুগুলো রক্ষিত হয়। তাই যদি বাড়িতে বা আশেপাশে অক্সিজেন সিলিন্ডার বা পোর্টেবল অক্সিজেন ইউনিট পাওয়া যায়, তা দ্রুত ব্যবহার করুন।
অক্সিজেন সরবরাহ করার সময় রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করুন। যদি অক্সিজেন না থাকে, তবে রোগীকে খোলা জায়গায় নিয়ে যান যেখানে তাজা বাতাস সহজেই প্রবেশ করে। হার্ট অ্যাটাক হলে এই ধরনের তৎপরতা রোগীর জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ওষুধ সেবন করুন (ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী)
হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত ওষুধ সেবন করানো প্রাথমিক চিকিৎসার একটি অপরিহার্য অংশ। অ্যাসপিরিন বা নাইট্রোগ্লিসারিন জাতীয় ওষুধ প্রায়ই এই ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে। তবে এটি রোগীর পূর্ব ইতিহাস এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হওয়া উচিত। ওষুধ সঠিক সময়ে সেবন করালে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি অনেকাংশে কমানো যায়।
তবে, ভুল ওষুধ বা মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবন করানো হলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই রোগীর কাছে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখার চেষ্টা করুন এবং ডাক্তারের নির্দেশ ছাড়া অন্য কিছু প্রয়োগ করবেন না। হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত এবং সঠিক ওষুধ প্রয়োগ অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর জীবন রক্ষার জন্য অপরিহার্য।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
হার্ট অ্যাটাক হলে সুস্থ জীবনযাপনের অভাব অনেক সময় দায়ী হতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মানেই শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ কমানো এবং নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ এই জীবনযাপনের অংশ। মানসিক চাপ হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের জন্য ধ্যান, যোগব্যায়াম, বা শখে মগ্ন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হার্ট অ্যাটাক হলে দেখা যায় যে রোগীদের পূর্ববর্তী জীবনধারায় অনিয়ম ছিল। সুস্থ জীবনযাপন এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা হৃদরোগের অন্যতম কারণ। তাই নিয়মিত ওজন মাপা এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখা অপরিহার্য। এছাড়াও, নিজেকে সুস্থ রাখতে দিনে কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা উচিত।
সুষম খাদ্য
হার্ট অ্যাটাক হলে প্রায়ই দেখা যায় যে খাদ্যাভ্যাসে গুরুতর সমস্যা ছিল। সুষম খাদ্য গ্রহণ হৃদরোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায়। শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, বাদাম এবং পূর্ণ শস্য খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। খাবারে চর্বি এবং চিনি কমিয়ে আনা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। হার্ট অ্যাটাক হলে রোগীদের খাদ্যতালিকায় লবণ কমানো এবং রেড মিট এড়িয়ে চলা পরামর্শ দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি, পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ কমে।
নিয়মিত ব্যায়াম
হার্ট অ্যাটাক হলে অনেক সময় শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা একটি বড় কারণ হিসেবে দেখা যায়। নিয়মিত ব্যায়াম হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অপরিহার্য। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, সাইক্লিং, বা হালকা জগিং করলে রক্তপ্রবাহ ভালো হয় এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ে।
যারা ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন না, তাদের জন্যও হাঁটা বা লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করা উপকারী হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক হলে এটি স্পষ্ট হয় যে ব্যায়ামের অভাব শরীরে চর্বি এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। তাই সক্রিয় জীবনধারা হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার
ধূমপান এবং মদ্যপান হার্ট অ্যাটাক হলে প্রাথমিক কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। ধূমপানে নিকোটিন হৃদযন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করে এবং ধমনী সংকুচিত করে। এতে রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। একইভাবে, অতিরিক্ত মদ্যপান রক্তচাপ এবং হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত করে।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করলে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকা যায়। হার্ট অ্যাটাক হলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে রোগীরা দীর্ঘ সময় ধরে এই অভ্যাসগুলো অনুসরণ করেছেন। তাই সচেতনতা এবং প্রয়োজনীয় মানসিক শক্তি দিয়ে এই অভ্যাসগুলো পরিহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
হার্ট অ্যাটাক হলে উচ্চ রক্তচাপ এবং অতিরিক্ত কোলেস্টেরল প্রায়শই দায়ী থাকে। নিয়মিত রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল পরীক্ষা হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। অতিরিক্ত চর্বি ধমনীগুলো সংকুচিত করে এবং রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এই অবস্থায় হৃদযন্ত্র অতিরিক্ত চাপ অনুভব করে, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হার্ট অ্যাটাক হলে অনেক সময় রোগীদের বলা হয় স্বাস্থ্যকর খাবার এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করতে। এটি শুধুমাত্র হৃদরোগ প্রতিরোধেই নয়, রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সহায়ক।
নিয়মিত চেকআপ
হার্ট অ্যাটাক হলে আগে থেকে হৃদরোগের কোনো লক্ষণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি—এমন ঘটনা খুবই সাধারণ। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। রক্তচাপ, সুগার, কোলেস্টেরল এবং ইসিজি পরীক্ষার মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
নিয়মিত চেকআপ হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে। হার্ট অ্যাটাক হলে চিকিৎসকরা প্রায়ই রোগীদের আরও সচেতন হতে বলেন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। আধুনিক প্রযুক্তি এবং পদ্ধতির মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি আগেই শনাক্ত করা যায়। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা একটি স্বাস্থ্যকর জীবনের অংশ হওয়া উচিত।
উপসংহার
হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণই জীবন বাঁচানোর প্রধান চাবিকাঠি। উপসর্গগুলো যত দ্রুত শনাক্ত করা যায়, চিকিৎসার সম্ভাবনা ততই ভালো হয়। এক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই উচিত নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো। ভুলে যাবেন না, হার্ট অ্যাটাক হলে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তই জীবন-মৃত্যুর ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। তাই এই তথ্যগুলো আপনার জীবনকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করবে বলে আশা করছি। জীবন মূল্যবান, তাই হার্টের যত্ন নিন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কখনোই দেরি করবেন না।