মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ এবং কিছু জরুরী চিকিৎসা!

মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ

হঠাৎ করেই বুকটা ধড়ফড় করছে। এক অদ্ভুত ক্লান্তি যেন পেয়ে বসেছে। এটাকে হয়তো সাধারণ দুশ্চিন্তার কারণ বলে উড়িয়ে দেওয়া যায়। আর এভাবেই হার্টের সমস্যার লক্ষণগুলো অবহেলা করে থাকেন আমাদের অনেক মা-বোন। গবেষণা বলছে, বিশ্বব্যাপী পুরুষদের তুলনায় নারীদের হার্ট অ্যাটাকের পর মৃত্যুর হার প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। অথচ আমাদের অনেকেই জানেন না যে, মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ পুরুষদের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন হতে পারে এবং তা প্রায়শই ভুল বোঝা হয়।

আমাদের দেশে হৃদরোগকে সাধারণত পুরুষদের সমস্যা হিসেবে দেখা হয়, অথচ বাংলাদেশে প্রতি বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত নারীদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ক্লাসিক্যাল বুকের ব্যথা ছাড়াও ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, বমিভাব- এসব লক্ষণ মেয়েদের হার্টের সমস্যার অন্যতম সতর্কবার্তা হতে পারে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এগুলো অনেক সময় অ্যাসিডিটি বা মানসিক চাপ বলে ভুল ধরা হয়। যার ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে দেরি হয়ে যায়। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ ও জরুরি চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

হার্টের সমস্যা কি শুধুই পুরুষদের জন্য?

হার্টের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে পুরুষদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হলেও এটি মোটেও শুধু পুরুষদের রোগ নয়। মহিলারাও সমানভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন, তবে তাদের ক্ষেত্রে উপসর্গ ও ঝুঁকির ধরন কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা সাধারণত হৃদরোগের উপসর্গ কম অনুভব করেন বা তা ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়, যা অনেক সময় দেরিতে সঠিক চিকিৎসা পাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে বুকের ব্যথা হৃদরোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলেও, নারীদের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট, চরম ক্লান্তি বা পিঠ ও চোয়ালে ব্যথা বেশি দেখা যায়। তাছাড়া, ইস্ট্রোজেন হরমোন নারীদের একটি স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা প্রদান করলেও মেনোপজের পর এই হরমোনের স্তর কমে গেলে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

নারীদের হৃদরোগের কারণগুলোর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, স্থূলতা ও মানসিক চাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে, কর্মজীবী ও গৃহিণী উভয় ধরনের নারীর ক্ষেত্রেই মানসিক চাপ একটি বড় কারণ হতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অনেক নারী নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীন থাকেন এবং হৃদরোগের লক্ষণগুলোকে সাধারণ ক্লান্তি বা অন্য কোনো সমস্যা মনে করে এড়িয়ে যান। তাই, হৃদরোগ যে কেবল পুরুষদের জন্য সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সমানভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, তা বোঝা জরুরি। সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক জীবনযাত্রা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।

পরিসংখ্যান কী বলে?

হৃদরোগকে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হলেও, পরিসংখ্যান বলছে এটি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সমানভাবে হুমকিস্বরূপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর প্রায় ১.৮ কোটি মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ৩১%। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন, যা দেশের মোট মৃত্যুর ৩৪%।

সোর্স-১

বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষদের সংখ্যা নারীদের তুলনায় দ্বিগুণ। গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৪.৫% হৃদরোগে আক্রান্ত, যার মধ্যে পুরুষ ৬% এবং নারী ৩.৫%।

সোর্স-২

তবে, গত ২০ বছরে নারীদের মধ্যে হৃদরোগে মৃত্যুর হার ৪৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পুরুষদের (৩২ গুণ) তুলনায় বেশি।

সোর্স-৩

নারীদের ক্ষেত্রে হৃদরোগের উপসর্গ পুরুষদের তুলনায় ভিন্ন হতে পারে। পুরুষদের সাধারণত বুকের ব্যথা প্রধান লক্ষণ হিসেবে দেখা দিলেও, নারীদের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট, চরম ক্লান্তি বা পিঠ ও চোয়ালে ব্যথা বেশি দেখা যায়। এছাড়া, মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের স্তর কমে যাওয়ায় নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান পরিহার এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

সোর্স-৪

সুতরাং, হৃদরোগ কেবল পুরুষদের সমস্যা নয়; এটি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সমানভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। সচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ

মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ

আচ্ছা, আমরা তো এতক্ষণে বুঝলাম যে হ্যাঁ এই হৃদরোগ মেয়েদেরও হতে পারে। তবে মূল বিষয় হলো কিভাবে বুঝবো যে হার্টের সমস্যা হয়েছে। চিন্তার কোন কারণ নেই, নিচের লক্ষণ গুলোর সাথে মিলিয়ে নিন। তবে একটি দুইটি কারণ মিলে গেলেই কিন্তু ধরে নিবেন না যে আপনার হার্ট এরই সমস্যা হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি প্রাথমিক ভাবে কেবল সন্দেহ করতে পারেন। চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন দক্ষ ডাক্তারের কাছে গিয়ে যথাযথ পরামর্শ এবং ডায়াগনসিস করে নিতে হবে। চলুন মেয়েদের হার্টের সমস্যার কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে আসি। 

বুকের ব্যথা বনাম চাপ বা অস্বস্তি

পুরুষদের মতো নারীদেরও হৃদরোগের ক্ষেত্রে বুকের ব্যথা একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ, তবে এটি ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে বুকের মাঝখানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, যা সাধারণত চাপযুক্ত ও সংকুচিত অনুভূতি তৈরি করে। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে বুকের ব্যথা অনেক সময় হালকা চাপ, পোড়ার অনুভূতি বা অস্বস্তি হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে। এমনকি এই অস্বস্তি নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় সীমাবদ্ধ না থেকে কাঁধ, পিঠ, বাহু বা গলায় ছড়িয়ে যেতে পারে। অনেকে এটিকে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা ভেবে অবহেলা করেন, যা পরবর্তীতে মারাত্মক পরিণতির কারণ হতে পারে।

নারীদের হৃদরোগের লক্ষণগুলো অনেক সময় এতটাই সূক্ষ্ম হয় যে, তারা তা সহজে গুরুত্ব দেয় না। গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক নারী হার্ট অ্যাটাকের সময় কোনো প্রকট ব্যথা অনুভব না করেও শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি বা পিঠের ব্যথা অনুভব করেন। ফলে, নারীদের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে হৃদরোগ শনাক্ত হওয়া দেরি হতে পারে। বুকের চাপ বা অস্বস্তি কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে এবং এটি বিশ্রামের পরও দূর না হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ক্লান্তি ও দুর্বলতা

নারীদের হৃদরোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও দুর্বলতা। হার্টের কার্যক্ষমতা কমে গেলে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়, ফলে শরীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না। এতে নারী সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন, বিশেষ করে দৈনন্দিন কাজকর্মের পর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন। অনেক সময় দেখা যায়, তারা সামান্য হাঁটাহাঁটি বা সিঁড়ি ভাঙার পরপরই প্রচণ্ড ক্লান্ত বোধ করেন, যা সাধারণত হার্টের সমস্যার একটি স্পষ্ট লক্ষণ হতে পারে।

এছাড়াও, অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যা অনেক সময় হৃদরোগের পূর্বলক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের আগে নারীরা অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন, যা কয়েকদিন বা সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী হতে পারে। অনেক সময় এটি মানসিক চাপ বা অতিরিক্ত কাজের ফলে হয় বলে মনে করা হয়, কিন্তু আসলে এটি হার্টের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। তাই যদি স্বাভাবিক কাজেও অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভূত হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

শ্বাসকষ্ট ও মাথা ঘোরা

নারীদের হৃদরোগের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হলো শ্বাসকষ্ট। হার্ট পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত পাম্প করতে না পারলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়, ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। নারীরা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রমের পরপরই বেশি শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, তবে কিছু ক্ষেত্রে বিশ্রামের সময়ও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, যদি কোনো নারী সিঁড়ি ভাঙার সময় বা স্বাভাবিক হাঁটাহাঁটির পর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, তাহলে তা হৃদরোগের সতর্ক সংকেত হতে পারে।

শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি মাথা ঘোরা বা ভারী লাগার অনুভূতি হৃদরোগের একটি গোপন লক্ষণ হতে পারে। অনেক নারী এটি সাধারণ দুর্বলতা বা রক্তস্বল্পতা মনে করে অবহেলা করেন। তবে, যদি মাথা ঘোরা, চোখে অন্ধকার দেখা বা ভারসাম্য হারানোর মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এটি হার্টের কার্যক্ষমতা হ্রাসের কারণে হতে পারে, যা সময়মতো চিকিৎসা না করালে গুরুতর বিপদের কারণ হতে পারে।

পেটের ব্যথা, বমিভাব বা হজমের সমস্যা

নারীদের হৃদরোগের ক্ষেত্রে অনেক সময় পেটের ব্যথা বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা সাধারণত অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা বলে ভুল বোঝা হয়। অনেক নারী হার্ট অ্যাটাকের সময় পেটে চাপ, ফোলাভাব বা অস্বস্তি অনুভব করেন, যা খাওয়ার পর আরও বেড়ে যেতে পারে। এটি হার্টের রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে হয়, যা পরোক্ষভাবে পেটের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া, বমিভাব বা বমি হওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় হার্ট ঠিকভাবে কাজ না করলে হজমের সমস্যা হয় এবং এর ফলে বমিভাব দেখা দেয়। অনেক নারী এটি গ্যাস্ট্রিক বা খাদ্যে বিষক্রিয়ার সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করেন, যা বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তাই, যদি পেটে চাপ, ব্যথা বা বমিভাব দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং এর সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ঘামের সমস্যা ও অস্থিরতা

অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত ঘাম হৃদরোগের একটি সাধারণ লক্ষণ, যা বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। নারীদের শরীরের হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে গরমকাল বা মেনোপজের সময় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু যদি হঠাৎ অতিরিক্ত ঠান্ডা ঘাম হয়, তাহলে তা হার্টের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের সময় অনেক নারী প্রচণ্ড ঠান্ডা ঘাম অনুভব করেন, যা সাধারণত ব্যথার সঙ্গে বা ব্যথা ছাড়াও দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত অস্থিরতা ও উদ্বেগও হৃদরোগের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে। হার্টের সমস্যা হলে নারীদের মাঝে চরম দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক বা মনের মধ্যে অজানা ভয় কাজ করতে পারে। এটি অনেক সময় মানসিক চাপ বা ডিপ্রেশনের সঙ্গে মিশে যায়, ফলে তারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না। তবে, যদি অস্থিরতা বা উদ্বেগের সঙ্গে বুকে অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট বা ক্লান্তির মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কেন মেয়েদের লক্ষণ আলাদা?

আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ গুলো সাধারণত পুরুষদের মত হয় না। কিছুটা ব্যতিক্রম এবং সহজে বুঝতে পারা যায় না। নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসছে- কেন? চলুন জেনে নিই, কেনই বা মেয়েদের ক্ষেত্রে হার্টের সমস্যার লক্ষণ এত আলাদা। 

শরীরের হরমোনজনিত পরিবর্তন

নারীদের শরীরের হরমোনজনিত পরিবর্তন হৃদরোগের লক্ষণকে পুরুষদের তুলনায় ভিন্ন করে তোলে। বিশেষ করে, ইস্ট্রোজেন হরমোন নারীদের হার্টের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইস্ট্রোজেন রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত ও নমনীয় রাখে, যা রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। তবে, মেনোপজের পর এই হরমোনের স্তর কমে যাওয়ার ফলে নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ কারণে, ৫০ বছর বয়সের পর নারীদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, মাসিক চক্র চলাকালে বা গর্ভাবস্থায় হরমোনের ওঠানামার কারণে অনেক নারী হৃদরোগের লক্ষণগুলো ভিন্নভাবে অনুভব করতে পারেন।

এছাড়া, গর্ভধারণ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির ব্যবহারও নারীদের হৃদরোগের ওপর প্রভাব ফেলে। গর্ভাবস্থায় দেহের অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিস পরবর্তী জীবনে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া বা গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপে ভুগেছেন, তাদের পরবর্তী জীবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেশি। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িতে থাকা সিন্থেটিক ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন কিছু নারীর রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদযন্ত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে, হরমোনজনিত পরিবর্তন নারীদের হৃদরোগের লক্ষণগুলোকে পুরুষদের তুলনায় আলাদা করে তোলে।

রক্তনালীর গঠনের ভিন্নতা

নারীদের রক্তনালীর গঠন পুরুষদের তুলনায় স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা ভিন্ন, যা হৃদরোগের লক্ষণ ও প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের করোনারি ধমনীগুলো তুলনামূলকভাবে সরু ও নমনীয়, ফলে রক্তপ্রবাহের বাধা দ্রুত অনুভূত হতে পারে। পুরুষদের হৃদরোগ সাধারণত প্রধান ধমনীতে ব্লকেজের মাধ্যমে ঘটে, যা বুকের তীব্র ব্যথার মাধ্যমে সহজেই প্রকাশ পায়। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলোর সংকোচন (Microvascular Disease) বেশি হয়, যা তুলনামূলকভাবে ছদ্মবেশী লক্ষণ তৈরি করে। এ কারণে, নারীদের ক্ষেত্রে বুকের ব্যথার পরিবর্তে শ্বাসকষ্ট, চরম ক্লান্তি বা বমিভাবের মতো উপসর্গ বেশি দেখা যায়।

এছাড়া, নারীদের রক্তনালী সংকুচিত হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে, যা মানসিক চাপ, অতিরিক্ত পরিশ্রম বা হরমোনজনিত কারণে দ্রুত প্রভাবিত হয়। পুরুষদের তুলনায় নারীদের হৃদযন্ত্রের রক্ত সরবরাহ কমে যাওয়ার প্রবণতা বেশি, যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের সময় লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে পারে এবং অনেক সময় হার্ট অ্যাটাক সনাক্ত করতে দেরি হয়। অনেক নারী যখন হাসপাতালে যান, তখন ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি হয়ে যায়। এসব কারণেই নারীদের হৃদরোগের লক্ষণগুলো পুরুষদের তুলনায় অনেকাংশে ভিন্ন হতে পারে।

স্ট্রেস ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব

নারীদের হৃদরোগের লক্ষণ ভিন্ন হওয়ার পেছনে মানসিক স্বাস্থ্য ও স্ট্রেসের বড় ভূমিকা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা পুরুষদের তুলনায় মানসিক চাপ ও উদ্বেগজনিত সমস্যায় বেশি ভোগেন, যা সরাসরি হৃদযন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ নারীদের মধ্যে “টাকোৎসুবো কার্ডিওমায়োপ্যাথি” বা “ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম” সৃষ্টি করতে পারে, যা হার্ট ফেইলিওরের মতো লক্ষণ তৈরি করে। এই সমস্যাটি মূলত তীব্র মানসিক আঘাত, দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতার ফলে হয়, যা নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

এছাড়া, নারীদের মধ্যে হতাশা (Depression) ও উদ্বেগজনিত রোগ (Anxiety) বেশি দেখা যায়, যা হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর ওপর প্রভাব ফেলে। হতাশা বা উদ্বেগের কারণে নারীরা শারীরিক পরিবর্তনগুলোর দিকে কম মনোযোগ দেন, ফলে তারা হৃদরোগের লক্ষণগুলো সহজে চিনতে পারেন না। অনেক নারী হৃদরোগের লক্ষণগুলোকে মানসিক বা শারীরিক ক্লান্তি ভেবে উপেক্ষা করেন, যা পরবর্তী সময়ে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করাও নারীদের হৃদরোগের লক্ষণ সঠিকভাবে চিহ্নিত ও প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হার্ট অ্যাটাকের সময় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ

হার্ট অ্যাটাকের সময় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ

দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও জরুরি সাহায্য ডাকা

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া। অনেক সময় মানুষ বুকের ব্যথা বা শ্বাসকষ্টকে স্বাভাবিক গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বলে ভুল করে, যা মারাত্মক বিপজ্জনক হতে পারে। বুকের মাঝখানে তীব্র চাপ, বাম হাতে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা বমিভাব অনুভূত হলে ৯৯৯ (বাংলাদেশে) বা অন্যান্য জরুরি নম্বরে কল করা উচিত। যত দ্রুত একজন রোগী হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে, তত বেশি তার প্রাণ বাঁচানোর সম্ভাবনা থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের সময় চিকিৎসা নিতে দেরি করলে মৃত্যু ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

সেরা হার্ট অ্যাটাক জরুরী চিকিৎসা হাসপাতাল

যদি রোগী একা থাকেন, তবে আশপাশের মানুষকে সাহায্য চাওয়ার জন্য বলা জরুরি। অনেক ক্ষেত্রে, রোগী সচেতন থাকলেও কিছুক্ষণের মধ্যে সংজ্ঞাহীন হয়ে যেতে পারেন, তাই অন্যদের উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগীকে কোনোভাবেই হাঁটাহাঁটি বা শারীরিক পরিশ্রম করতে দেওয়া উচিত নয়, কারণ এতে হৃদযন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং ক্ষতির মাত্রা বেড়ে যায়। রোগীকে একটি আরামদায়ক অবস্থানে বসানো বা শোয়ানো উচিত, যাতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সুবিধা হয়।

শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা ও অপ্রয়োজনীয় চাপ কমানো

হার্ট অ্যাটাকের সময় রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগী যদি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তবে তার হৃদস্পন্দনের গতি আরও বেড়ে যেতে পারে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে। শান্ত থাকা এবং ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়ার জন্য তাকে বোঝানো উচিত। যদি রোগী অজ্ঞান হয়ে যান এবং শ্বাস না নেন, তবে CPR দেওয়া প্রয়োজন, যা পরবর্তী অংশে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

কিছুক্ষণের মধ্যে যদি রোগী তীব্র শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, তবে কাপড় ঢিলেঢালা করে দেওয়া উচিত, যাতে বুকে কোনো চাপ না পড়ে। অনেক সময়, রোগীর হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে, তাই পাশেই থাকা কারও উচিত তার পালস চেক করা এবং প্রয়োজনে কার্ডিয়াক মাসাজ বা CPR শুরু করা। হার্ট অ্যাটাকের সময় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া একজন মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে, তাই একে “গোল্ডেন আওয়ার” বলা হয়—এই সময়ের মধ্যে চিকিৎসা না পেলে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

CPR ও নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়ার গাইডলাইন

CPR (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) পদ্ধতি

হার্ট অ্যাটাকের ফলে যদি রোগী সংজ্ঞাহীন হয়ে যান এবং শ্বাস না নেন, তবে তাৎক্ষণিকভাবে CPR (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) শুরু করা দরকার। CPR হলো একটি জীবনরক্ষাকারী পদ্ধতি, যা হার্টবিট বন্ধ হয়ে গেলে রোগীর হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল অব্যাহত রাখতে সহায়তা করে।

CPR করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা উচিত:

  • রোগীকে শক্ত সমতল জায়গায় শোয়ান এবং তার শ্বাস-প্রশ্বাস পরীক্ষা করুন। যদি শ্বাস নিতে না পারেন, তাহলে CPR শুরু করুন।
  • উভয় হাত একসঙ্গে রেখে রোগীর বুকের মাঝখানে (স্টার্নাম) চাপ দিন। প্রতি সেকেন্ডে দুইবার গতি বজায় রেখে ৩০ বার বুক চেপে ধরুন।
  • এরপর মুখে মুখে শ্বাস (Mouth-to-Mouth Resuscitation) দিন—রোগীর নাক চেপে ধরে তার মুখে দুইবার শ্বাস দিন।
  • CPR চালিয়ে যান যতক্ষণ না রোগী শ্বাস নিতে শুরু করেন বা জরুরি চিকিৎসক এসে পৌঁছায়।

CPR সঠিকভাবে প্রয়োগ করা গেলে হৃদযন্ত্র পুনরায় চালু হতে পারে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত হয়। যারা CPR প্রশিক্ষিত নন, তারা শুধু বুকে চাপ দেওয়ার (Compression-Only CPR) মাধ্যমে সাহায্য করতে পারেন, যা অনেক ক্ষেত্রেই জীবন বাঁচাতে পারে।

নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুত নেওয়া

হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে দ্রুত হাসপাতালের চিকিৎসা পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি CPR দেওয়ার পর রোগী সচেতন হন, তবুও অবিলম্বে হাসপাতালে নেওয়া উচিত। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ৯০ মিনিটের মধ্যে যদি চিকিৎসা দেওয়া যায়, তবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার সময়, তার সকল মেডিকেল তথ্য বা পূর্বের হার্টের সমস্যা সম্পর্কে চিকিৎসকদের জানানো উচিত। যদি সম্ভব হয়, অ্যাম্বুলেন্স ডেকে নেওয়া ভালো, কারণ অ্যাম্বুলেন্সে ইসিজি মনিটরিং ও জরুরি ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকে। গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় রোগীকে স্বাভাবিক রাখতে এবং বেশি নড়াচড়া করতে না দিতে পরামর্শ দেওয়া উচিত, কারণ অতিরিক্ত নড়াচড়া হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ বাড়াতে পারে।

অ্যাসপিরিন খাওয়ার গুরুত্ব

অ্যাসপিরিন কীভাবে কাজ করে?

হার্ট অ্যাটাকের সময় অ্যাসপিরিন একটি জীবনরক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে কাজ করতে পারে। এটি মূলত একটি রক্ত পাতলা করার ওষুধ, যা রক্তনালীর মধ্যে জমাট বাঁধা (Blood Clot) প্রতিরোধ করে। হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ হলো করোনারি ধমনীর রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া, যা মূলত রক্ত জমাট বাঁধার কারণে ঘটে।

একটি পূর্ণবয়স্ক অ্যাসপিরিন (৩০০-৩২৫ মিলিগ্রাম) চিবিয়ে খেলে এটি দ্রুত রক্তে মিশে যায় এবং জমাট বাঁধা রক্তকে গলিয়ে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের সময় দ্রুত অ্যাসপিরিন খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি ২০-২৫% পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তবে, অ্যাসপিরিন গ্রহণের আগে যদি রোগী অ্যালার্জিক হন বা রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

কখন এবং কীভাবে অ্যাসপিরিন খাওয়া উচিত?

হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ দেখা দিলে, অ্যাসপিরিন খাওয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে এটি হার্ট অ্যাটাকের কারণেই হচ্ছে। অনেক সময় এসিডিটির কারণে বুকের ব্যথা হতে পারে, যা অ্যাসপিরিন দিয়ে কমবে না। তাই, হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাব্য লক্ষণ দেখা দিলে অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খাওয়ার পর দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।

অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খাওয়ার পর এটি দ্রুত কাজ করে এবং ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। তবে, রোগী যদি ওষুধ খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান বা বমি করেন, তবে সেটি হার্ট অ্যাটাকের আরও মারাত্মক লক্ষণ হতে পারে। এ অবস্থায় অবিলম্বে CPR এবং জরুরি চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে যাদের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান বা পূর্বে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, তাদের চিকিৎসকের পরামর্শে প্রতিদিন কম মাত্রার অ্যাসপিরিন গ্রহণের অভ্যাস করা যেতে পারে। তবে এটি অবশ্যই নিজ থেকে না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।

উপসংহার

হার্টের সমস্যার লক্ষণ চেনার ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। কেননা তাদের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো প্রচলিত ধারণার চেয়ে অনেকটাই আলাদা। জীবনযাত্রার পরিবর্তন, সময়মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা নারীদের হার্ট-সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। মনে রাখবেন, হার্ট অ্যাটাক কখনোই শুধু পুরুষদের সমস্যা নয়- এটি মেয়েদের ক্ষেত্রেও নীরব ঘাতক হতে পারে। তাই সময় থাকতে সচেতন হোন, নিজের ও প্রিয়জনদের হার্টের যত্ন নিন!

Related posts

Leave a Comment